বাংলা নিউজ ডেস্ক: একে তো করোনার ধাক্কা। উপরন্তু আমফানের তাণ্ডব। দুই বিপর্যয়ে জেরবার বাংলা। এমন পরিস্থিতিতে মুসলিমদের ঘরে বসেই ইদ পালনের পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “লকডাউন চলছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক যে কোনও ধর্মীয় জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তাই বাড়িতে বসেই এবার ঈদ পালন করুন।করোনা রুখতে ঘরে থাকা দরকার।” একইসঙ্গে ২৫ মে থেকে রাজ্যে বিমান পরিষেবা শুরু না করার আবেদনও জানান মুখ্যমন্ত্রী। এ নিয়ে তিনি কেন্দ্রের কাছে আবেদন করবেন বলেও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সামনেই ইদ। প্রতিবারই রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ঈদ পালন হয়। রেড রোডের নামাজে উপস্থিত থাকেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ইফতারেরও পার্টিও দেন। এবার করোনা আবহে সেসব কিছুই করতে পারছেন না। তার জন্য কার্যত ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “আপনারা উৎসব পালন করতে পারছেন না। আমি তার জন্য সমব্যথী। কিন্তু এবার করোনা রুখতে ঘরে থাকতেই হবে।” এ প্রসঙ্গে তিনি অন্যান্য দেশের কথাও তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “বাঙালিরাও এবার নববর্ষ পালন করতে পারেননি। বাসন্তি পুজো, রামনবমী পালন করা হয়নি। কিন্তু কী করা যাবে। মানুষের প্রাণ বাঁচাতে ঘরে থাকতেই হবে।” এ বিষয়ে বলতে গিয়ে বিজেপিকে একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “বিজেপি তো বাংলায় অশান্তি দেখাতে বসেই রয়েছে। তাই কারোর প্ররোচনায় পা দিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়বেন না। অশান্তি করবেন না।” এদিন তিনি পরিযায়ী শ্রমিকদেরও ঘরে থাকতে অনুরোধ করেন।
২৫ মে-র পর রাজ্যে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন পাঠাতে অনুরোধ করেছে প্রশাসন। কারণ, এই কয়েকদিন ট্রেনে করে পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরলেও তাঁদের ঘরে ফেরানো সম্ভব নয়। গ্রামে ফেরার রাস্তায় গাছ পড়ে রয়েছে। ফলে শ্রমিকদের এইসময় ঘরে পাঠানো সম্ভব হবে না বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাই দিন কয়েক পর ট্রেন রাজ্যে আসুক চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “ভিনরাজ্য থেকে ফিরলে শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। স্টেশনে থার্মাল স্ক্রিনিং করা হবে। তবে জেলায় ফিরলে লালারস পরীক্ষা করা হবে। কিন্তু সরকারি কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো সম্ভব নয়। বিপর্যয়ের ফলে বহু সরকারি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে আর বিপর্যয় ঘটাতে চাই না। তাই নিজের বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে থাকুন। পরিবারের বানানো খাবার খান।” একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী গ্রামের কোয়ারেন্টাইন মডেলের কথা তুলে ধরেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “বহু গ্রামে বাইরে থেকে ফেরা মানুষের জন্য গ্রামের বাইরে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। পরিবারের মানুষ যেখানে খাবার জিনিস পৌঁছে দিচ্ছে।” এটাই মডেল হোক বলে সওয়াল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।